ছাতক প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার ঘিলাছড়া স্কুল এন্ড কলেজে প্রধান শিক্ষক পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূণ্য থাকায় পিছিয়ে পড়ছে শিক্ষা কার্যক্রম। এব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠান গভর্নিংবডির সভাপতি মোঃ মোশাহিদ আলী সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালে ঘিলাছড়া স্কুল এন্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর সাথে অনৈতিক আচরণ করেন প্রধান শিক্ষক এ.কে.এম মজিবুর রহমান। ওই ঘটনায় প্রতিষ্ঠান গভর্নিংবডি যথাযথ প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রধান শিক্ষক এ.কে.এম মজিবুর রহমানকে বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তের বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সিলেট আরবিট্রেশন বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হয়। শিক্ষা বোর্ড সাত দিনের মধ্যে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন। শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশ পেয়ে প্রধান শিক্ষক এ.কে.এম মজিবুর রহমান গভর্নিং বডির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ পত্র জমা দেন। আর বিধি মোতাবেক তিনি বেতন ভাতাসহ সকল পাওনা বুঝে নেন। পরবর্তীতে তিনি জোর পূর্বক স্বাক্ষর আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনে আমল গ্রহণকারী হাকিম আদালত দোয়ারাবাজার দাখিল করেন। আদালত অভিযোগ তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য দোয়ারাবাজার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেট দায়িত্ব দেয়া হয়। সিলেট পিবিআই অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করলে, আদালত প্রধান শিক্ষক এ.কে.এম মজিবুর রহমানের অভিযোগ খারিজ করে দেন। বিদ্যালয়ে নতুন প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। একই সাথে এ.কে.এম মজিবুর রহমানের নাম এমপিও থেকে বাদ দেওয়ার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট লিখিত ভাবে আবেদন করা হয়। এমপিও থেকে প্রধান শিক্ষকের নাম বাদ দেয়ার জন্য অনলাইনে কয়েকদফা আবেদন করলেও সুনামগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম কোন মন্তব্য ছাড়াই আবেদন ফেরত পাঠানো হয়। ওই কারনে দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত প্রধান শিক্ষক বিহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিভাবক ও সুধী জনের মতে, ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক না থাকায় দিনদিন প্রতিষ্ঠানের ফলাফল বিপর্যয় হচ্ছে। দেখা দিয়েছে শিক্ষা কার্যক্রমে স্থবিরতা। তারা দ্রুত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পথ সুগমের দাবি জানিয়েছেন।
ঘিলাছড়া স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিংবডির সভাপতি মোঃ মোশাহিদ আলী বলেন, প্রধান শিক্ষক নিয়োগে জেলা শিক্ষা অফিসারের অহেতুক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির কারনে বার বার বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরও প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাচ্ছেনা। তাই নিয়োগ প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর তিনি লিখিত আবেদন করেন।
সুনামগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক এ.কে.এক মজিবুর রহমানের দায়েরী মামলা খারিজ হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। এমপিও থেকে তার নাম বাদ দেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে কাজ করছেন বলে তিনি
জানিয়েছেন।