সুনামগঞ্জের শাল্লায় পুরনো বাঁধের মাটি দিয়েই বাঁধ নির্মাণ করছেন পিআইসি কমিটির সদস্যরা। ফলে ফসল রক্ষা বাঁধের নির্মাণকাজে থাকা স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিরা অক্ষত বাঁধ কেটে সেই মাটি দিয়েই নতুনভাবে বাঁধ নির্মাণ করছেন বলে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন একাধিক সোনালী ফসল বুনা হাওরপাড়ের কৃষকরা। হাওর রক্ষা বাঁধ মেরামত প্রকল্প কমিটি গঠনের অনিয়মের কারনে কৃষকের সোনালী ফসল গুলায় তুলা নিয়ে আসংখ্যায় আছে বলে দাবী কৃষকের। ৯৪,৯৫, নং পিআইসির বিভিন্ন অনিয়মের কথা অভিযোগে তুলে ধরেন তারা।
বুধবার(৩১ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শাল্লা উপজেলার ছায়ার হাওর উপ প্রকল্পের ৯৪ ও ৯৫ নং পিআইসিতে পুরনো বাঁধের মাটি কেটে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। আবার কিছু কিছু পিআইসিতে এখনো মাটি ফেলা হয়নি, সামান্য মাটি দিয়ে প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে। আবার অনেক পিআইসিতে বালু মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণের সত্যতা পাওয়া গেছে। পুরনো বাঁধের স্লোভের মাটি এক্সেভেটর মেশিন দিয়ে কেটে বাঁধের উপরে তুলা হচ্ছে। বাঁধের উপর কেটে সমান করে রাখা হয়েছে। দেখলে মনে হয় যেন এটি সদ্য করা নতুন বাঁধ।
স্থানীয় কৃষক আকাশ মিয়া ও ঝন্টু দাস বলেন, আমরা জানতাম প্রকৃত কৃষকরা পাবে পিআইসি। কিন্তু ৯৪ ও ৯৫ নং বাঁধের কাজ যারা পাইছে তারা প্রকৃত কৃষক না এবং বাঁধের গোড়ার থেকেই মাটি কেটে বাঁধ মেরামত করা হয়েছে।
৯৫ নং পিআইসির সভাপতি ও ১নং আটগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন আল কাওছার বলেন, মাটি কোঁড়ার বিষয়টি হচ্ছে এই বাঁধে মোট ৫৬৩ মিটার কাজ। এখানে ৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ। আমি যখন কাজ করছি ভুল আমার থাকতেই পারে। কিন্তু আমার জানামতে ১০ কেজি মাটিও নিচ থেকে উপরে উঠেনি। সদস্য সচিব বলেন, এভাবে বাঁধের স্লোভের মাটি এনে উপরে তোলাই নিয়ম।
৯৪ নং পিআইসির সভাপতি আশরাফ মনির সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বলেন, এই হাওয়রে আমারও কয়েক হাল জমি আছে। যাঁরা বলেছেন এই হাওয়রে আমার কোনো জমি নেই তারা মিথ্যা কথা বলেছে, আমি আমার জমির সকল কাগজ পত্র জমা দিয়েই এই হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ পেয়েছি। আমি আশা করি নির্ধারিত সময়ে আগেই বাঁদের কাজ সমাপ্ত করবো।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ প্রকৌশলী কর্মকর্তা রিপন আলী বলেন, আমাদের যে জনবল আছে তাদেরকে ১৩১ টি পিআইসির দ্বায়িত্ব নিয়ে প্রতিদিন মাঠে কাজ করছেন। কোন পিআইসিতে বালু মাটি ও কালো মাটি দেখলে তা সড়িয়ে ফেলতে বলা হচ্ছে। কোথাও কোথাও কম্পেকশন না করে মাটি ফেলে দেওয়া হচ্ছে। যারা পিআইসি নিয়েছে তারা মূলত ঠিকাদার না। তাদের ফিলিং চ্যাট দিচ্ছি কিন্তু আমরা না বুঝিয়ে দিলে তারা বুঝতেছে না। পিআইসিদের এজন্যই ভুল ত্রুটিগুলো একটু বেশিই হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়ত মাঠে যাচ্ছি বাঁধে কোন প্রকার অনিয়ম করার সুযোগ নেই বলে জানান তিনি।
শাল্লা উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর আহসান বলেন, ফসল রক্ষা বাঁধে কোন অনিয়ম করা যাবে না। আমরা প্রতিদিনই সরেজমিনে গিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছি। এবং কোনো অনিয়মের অভিযোগ পেলেই সাথে সাথে কঠোর ব্যবস্থা নিব।